ইসলামী ছাত্রসেনা ও ইসলামিক ফ্রন্টের উদ্যোগে জঙ্গীবাদ বিরোধী গণজমায়েত অনুষ্ঠিত
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব জাতীয় নেতা অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর বলেছেন,- অভিশপ্ত জঙ্গীবাদ এখন শুধু জাতীয় সমস্যা নয়। আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলেও এটি এক বিশাল হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ক্রমবর্ধমান এহেন জঙ্গীবাদী অপতৎপরতায় গোটা নাগরিক জীবন ওষ্ঠাগত। অব্যাহত বোমাবাজী, অস্ত্রবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমুহ ধ্বংস করে, ধর্মীয় উপাসনালয় সমুহে প্রার্থনারতদের প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করে এরা গোটা দেশকে আতংকের জনপদে পরিণত করেছে। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার গুলশানস্থ স্প্যানিশ হোটেলে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ জন নিরীহ বিদেশী নাগরিক সহ ২৮ জনকে হত্যা, মুসলিম মিল্লাতের তীর্থস্থান পূণ্যভূমি পবিত্র মদিনা নগরীতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে ৮ জনকে হত্যা ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পবিত্র ঈদের দিন অতর্কিত হামলা চালিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ২ জন পুলিশ সদস্য সহ ৫ জন আদম সন্তানের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে তিনি বলেন,- ইসলাম ধর্মে জঙ্গীবাদের কোন স্থান নেই। অস্ত্রের জোরে কিংবা কোনপ্রকার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিশ্বব্রহ্মান্ডে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়নি। শান্তি, কল্যাণ ও মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় ইসলামের শ্বাশত ও কালজয়ী আদর্শই তাবৎ দুনিয়ায় একমাত্র সত্য হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। যে সকল উগ্রবাদী গোষ্ঠি ইসলামের নামে এহেন অবাঞ্চিত ও গর্হিত জঙ্গীবাদী কর্মকান্ডের মাধ্যমে বিশ্বদরবারে ইসলামকে বিতর্কের মুখোমুখী দাঁড় করে মুসলমানদের একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠি হিসেবে চিহ্নিত করতে চায় এরা কখনও মুসলিম হতে পারে না। এরা মুসলমান ও ইসলামের শত্রু। তাই এখনই এদের নিমূর্লে দেশপ্রেমিক জনগনকে ইস্পাত কঠিন শপথে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় ব্যাহত হবে জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি। ভুলুন্ঠিত হবে এযাবতকালের সর্বপ্রকার জাতীয় অর্জন। সংকটাপন্ন হবে রক্তমুল্যে অর্জিত দেশের মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। এছাড়াও এহেন অভিশপ্ত জঙ্গীবাদী দৌরাত্ম্য প্রতিরোধে জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল রাজনৈতিক দলসমুহ ছাড়াও সংসদের বাইরের অপরাপর ছোট-বড় সকল নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারকে পারস্পরিক ইতিবাচক সংলাপের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহনের মধ্য দিয়ে সম্মিলিত জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও আল্লামা জুবাইর ইতোপূর্বে গুলশানে সংঘটিত হামলাকে জাতীয় জীবনে এক মহা অশনি সংকেত বলে মন্তব্য করে ইতোপূর্বে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গী সংগঠন আই এস কর্তৃক টুইটারে প্রদত্ত বাংলাদেশে আরও বড় ধরণের হামলা করার হুমকির বিষয়টি নিয়ে শংকা প্রকাশ করেন। উপরন্তু রাজধানীর সবচেয়ে বড় শপিংমল “যমুনা ফিউচার পার্কে ” আগামী ২০ জুলাইয়ে জঙ্গী হামলার আইএস এর টুইটার বার্তাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে না দেয়ার জন্য সরকারের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে এম সোলায়মান ফরিদ বলেছেন,- দেশের জাতীয় রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকতর ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতি চর্চার কারণে দেশপ্রেম দৌড়ে পালিয়েছে এবং একারণে বরারবই দেশের বৃহত্তর স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করে আরও বলেন,- ইতোপূর্বে দেশের যে সকল রাজনৈতিক দল ও কর্মী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা শিক্ষার্থীদের জঙ্গী সম্পৃত্তির সত্যতা মিলেছে, এসকল প্রতিষ্ঠান এর উপর কঠোর প্রশাসনিক নজরদারী অব্যাহত রাখার উপর জোর দাবী জানান। এছাড়াও তিনি জঙ্গীবাদী সন্ত্রাস নিমূর্লে প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক মহলের শর্তহীন সহযোগীতা কামনার উপরও গুরুত্বারোপ করেন।
বিশেষ বক্তার বক্তব্যে আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর বলেছেন,- জঙ্গীবাদী কর্মকান্ডে উদ্বুদ্ধকরণ, উস্কানীদাতা ও পবিত্র ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা ও বিকৃতকারী প্রচার মাধ্যম পিচ টিভির সম্প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্তকে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে সরকারকে অভিনন্দন জানান। এছাড়াও তিনি এহেন জঙ্গীবাদী সন্ত্রাস মোকাবিলায় দেশের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, খতিব, ইমাম-মোয়াজ্জিন সহ সকল ইসলামপ্রিয় জনতাকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য উদাত্ত আহবান জানান।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার উদ্যোগে অদ্য ১১ জুলাই ২০১৬ ইং রোজ সোমবার বিকেল ০৩ টায় মুসলিম মিল্লাতের তীর্থস্থান, পূণ্যভূমি পবিত্র মদিনা নগরী, রাজধানীর গুলশানস্থ স্প্যানিশ হোটেল এবং কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গী হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম জামালখানস্থ প্রেসক্লাব চত্বরে অনুষ্ঠিত বিশাল গণজমায়তে বক্তারা উপরোক্ত মত ব্যক্ত করেন।
ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব মৌলানা কাজী জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণজমায়তে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব হযরতুলহাজ্ব অধ্যক্ষ আল্লামা জয়নুল আবেদীন জুবাইর, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব জননেতা এম সোলায়মান ফরিদ এবং বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,- ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় বিভাগীয় সাংগঠনিক সচিব আলহাজ্ব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর।
উত্তর জেলা ইসলামিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা জয়নুল আবেদীন জিহাদীর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন,- অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আকতারী, অধ্যক্ষ আল্লামা সৈয়দ জসিম উদ্দিন তৈয়বী, আবদুর রহমান মান্না, আলহাজ্ব আক্কাস উদ্দিন খোন্দকার, আল্লামা সৈয়দ রফিকুল ইসলাম তাহেরী, অধ্যাপক মৌলানা হাফেজ আহমদ, অধ্যাপক আলহাজ্ব মৌলানা স. ম শহীদুল হক ফারুকী, এম রাশেদুল ইসলাম, মৌলানা জানে আলম নিজামী, অধ্যক্ষ মুসলিম উদ্দিন, এম নাছির উদ্দিন, মৌলানা নিজাম উদ্দিন আলকাদেরী, মৌলানা মুহাম্মদ ইদ্রিস, আলহাজ্ব ওয়াহেদ মুরাদ, আলহাজ্ব এ এম মঈনউদ্দিন চৌধুরী হালিম, ডাঃ হাসমত আলী তাহেরী, মুহাম্মদ সাদেক, আলহাজ্ব ইলিয়াছ খাঁন ইমু, ছাত্রনেতা এস এম আবু সাদেক ছিটু ও এমদাদুল ইসলাম প্রমুখ।